অধিকার ডেস্ক:: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন,অযৌক্তিক বেতন ফি বাতিল,স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতি বন্ধ ও সিদ্ধান্ত গ্রহনে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবিতে গত বছর থেকে চলমান ছাত্র আন্দোলন দমনে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তিন শিক্ষককে চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল।
আজ ২০ জানুয়ারি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জল বিশ্বাস এক যুক্ত বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়ে বলেন , উশৃঙ্খলতা ও অসদাচরণের কল্পিত অস্পষ্ট অভিযোগ এনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হয়রানী ও ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে খু.বি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌল চেতনার পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয় কতিপয় দালান- কোঠা,অফিস,কর্মকর্তা কর্মচারীর সমষ্ঠি নয়। এটি জ্ঞাণ সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। স্বাধীন যৌক্তিক মত প্রকাশ ও ছাত্রদের নৈতিক সংগঠিত অবস্থান ব্যাতিত বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞাণ চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত হয় না। সামন্তীয় সমাজে শাসকদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক মতপ্রকাশ করলেই তাকে উশৃঙ্খল বিপথগামী বলে শাস্তির আওতায় আনা হত। এই পশ্চাৎপদ চিন্তার বিরুদ্ধে লড়াই করেই দ্বাদশ শতকে স্বায়ত্তশাসন , স্বাধীন মতপ্রকাশ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কনসেপ্ট গড়ে উঠে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের অর্থে পরিচালিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের অপরাধে, ছাত্রদের মত প্রকাশের সুযোগ না দিয়ে কতিপয় অস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চরম প্রতিক্রিয়শীল সেচ্ছাচারি মনোভাবের প্রকাশ।
বিবৃতিতে আরোও বলা হয়, ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত ৫ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অব্যাবস্থাপনা ও অসচ্ছতার চিত্র ফুটে উঠছে। এই সংকট নিরসনে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ না করে আন্দোলনকারী ছাত্র শিক্ষকদের হয়রানীর মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক দুর্নীতি ও অব্যাবস্থাপনার বিষয়টি আরোও স্পষ্ট হয়েছে। আবার এই সংকট শুধুমাত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় । সামগ্রিক রাষ্ট্র পদ্ধতিতে যে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে তারই প্রতিফলন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ঘটছে। বর্তমানে ছাত্রদের নানাভাবে হয়রানি ও শিক্ষাজীবনকে জিম্মি করে আন্দোলন দমনের ঘৃণ্য কৌশল বেছে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
বিবৃতিতে অবিলম্বে দুই শিক্ষার্থীর উপর অন্যায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার,শিক্ষক হয়রানি বন্ধ ও ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় ।