মারুফ রসুল ::
প্রতিটি অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে সেই অপরাধ বন্ধে ভূমিকা রাখতে। জনসাধারণের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ অবশ্যই প্রয়োজন কিন্তু দিনশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অপরাধীর শাস্তি প্রদানই অপরাধ নির্মূলের মূল কথা।
বুয়েটে এক সময় সনি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিলো, তুমুল প্রতিবাদ হয়েছিলো কিন্তু এই হত্যা মামলার আসামী সেই ছাত্রদল নেতাদের আজ আর কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। কোনো বিচার হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর হত্যা মামলার আসামী সাবেক দশ ছাত্রলীগ নেতার সকলেই বেকসুর খালাস পেয়েছিলো আদালতের রায়ে। খবরে পড়েছিলাম আবু বকরের পরিবারকে নাকি রায় সম্বন্ধেও জানানো হয়নি।
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, লেখক অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয় দাশ, বুয়েটেরই আরেক শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দীপ- কোনো হত্যাকাণ্ডেরই কোনো বিচার হয়নি। কারণ প্রতিটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হবার পর আমরা প্রথমে এগুলো জায়েজ করার চেষ্টা করি, পরে মেপে প্রতিবাদ করি। কখনও ধর্মের তত্ত্ব টেনে অভিজিৎ বা অনন্ত বিজয়ের হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করি, কখনও রাজনৈতিক দলের তত্ত্ব টেনে আবু বকর বা বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করি। ফলে আমাদের আইনও মেপে পা ফেলে- কখনও ধর্মের নামতা মুখে, কখনও রাজনৈতিক দলের নামতা মুখে।
বুয়েটের যে চার খুনী পিটিয়ে আবরারকে হত্যা করলো, তারা এগুলো জানে। তারা জানে যে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে অতীতে অনেক অপরাধী পার পেয়ে গেছে। তারা জানে আমাদের ইস্যু মোড়া দিয়ে শুয়ে থাকা মস্তিষ্কের কোথাও আবু বকর, সনিরা নেই। এরা থাকে গুগলে। কদিন পর আবরারও চলে যাবে গুগলে। আমরা ভুলে যাবো যে, বিচার হয়নি, অপরাধীরা বেকসুর খালাস পেয়ে গেছে।
কিন্তু আইন তো সবকিছুর উর্ধ্বে। আমরা না হয় ইতর কিন্তু আইন তো বলে- তাকে এসব নেতিবাচক বিশেষণে বিশেষায়িত করা যাবে না।
লেখক : অনলাইন এক্টিভিস্ট
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)